কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ফার্মেসী বিভাগে অতিদ্রুত শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে ফের অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২০ জুলাই) দুপুর ১২ টার দিকে শিক্ষার্থীর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন এবং শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বিক্ষোভ মিছিলে ‘শিক্ষক নাই, শিক্ষক নাই, ফার্মেসিতে শিক্ষক নাই’, ‘শিক্ষক চাই, শিক্ষক চাই, ফার্মেসিতে শিক্ষক চাই’, ‘এক দফা এক দাবি, ফার্মেসিতে শিক্ষক চাই’, ‘নো টিচার, নো ক্লাস’, ‘ধিক্কার ধিক্কার, প্রশাসন ধিক্কার’- শীর্ষক স্লোগান দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন এবং বিভাগের শ্রেনিকক্ষগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেন। সোমবারের মধ্যে আশানুরূপ সিদ্ধান্ত না এলে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলানোর হুঁশিয়ার দেন তারা।
এ সময় ফার্মেসি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাসনিয়া ইসলাম তারিন বলেন, ‘আমাদের চলমান ৮টি ব্যাচ এর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছে মাত্র ৫ জন। যার কারণে প্রতিনিয়ত আমাদের ক্লাস, মিড ও ল্যাব পেছানো হচ্ছে। ফলে আমরা তীব্র সেশন জটে পড়ছি। এখন প্রশাসনের কাছে আমাদের একটাই দাবি অতি দ্রুত শিক্ষক চাই।’
বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘আমাদের বিভাগ দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকটে ভুঁগছে, যার ফলে আমরা মাসের পর মাস সেশন জটে পড়ছি। আমরা বার বার প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি জমা দিচ্ছি, এই প্রশাসন আমাদের শিক্ষক দিবে এটা বলেও ভরসা দিচ্ছে না। সারাদেশে এমন কোনো আন্দোলন হয়নি শিক্ষক চাওয়া নিয়ে। যা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জার। আমরা প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিতে চাই, এরমধ্যে আমাদের সমস্যার সমাধান না হলে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবো।’
এই বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ইউজিসির পরিচালকের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওনারা আজকে মিটিং করে জানাবেন। যারা আমাদের এখানে পাঠিয়েছেন, যারা এখানের প্রতি বছরের খরচ দেন তারা যদি অতিরিক্ত শিক্ষক নিয়োগ না দেয় তাহলে আমি কীভাবে দিবো। আশাকরি এই সপ্তাহের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ আমি আসার পর ৬৩ জন শিক্ষক চেয়ে আবেদন করি। এরপর আমাদের রেজিস্ট্রারকে ডেকে বলা হয় তালিকার সংখ্যা কমানোর জন্য, যা আমরা ৪০ জনে নিয়ে আসি। কিন্তু গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসার অপরাধ দেখিয়ে আমাদের একজনও নিয়োগ দেওয়া হয় নি। আমাদের ৯৭ জন শিক্ষক উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে আছেন। বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে ২০ শতাংশ শিক্ষক অর্থাৎ ১৯ জন শিক্ষক নিয়োগ দিতে পারে। আমরা ২০ জন শিক্ষকের জন্য বলেছি। আশাকরি আগামী সপ্তাহের মধ্যে ওনারা অনুমতি দিয়ে দিবে।’
উল্লেখ, গত বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন।